সড়কে গাড়ি রাখলেই গুণতে হবে টাকা। সেই টাকার পরিমাণ হবে ঘণ্টায় ১০০ টাকা পর্যন্ত। এই নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। মূলত নগরীর সড়কে গাড়ি না রাখার জন্যই এমন উদ্যোগ ডিএনসিসির।
পৃথিবীর অন্য বড় শহরগুলোর মতো ঢাকার সড়কেও অন-স্ট্রিট কার পার্কিং বা সড়কের উপরেই গাড়ি পার্কিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। যানজট কমাতে রাজধানীতে অন-স্ট্রিট কার পার্কিংয়ের এই উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
অন-স্ট্রিট পার্কিং ব্যবস্থা চালুর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য রাস্তায় গাড়ি না রাখা। যদি কেউ রাখে তাহলে তাকে মোটা অংকের অর্থ গুণতে হবে। প্রথম দুই ঘণ্টায় নেওয়া হবে ৫০ টাকা। সেক্ষেত্রে ১ মিনিট রাখলেও ৫০ টাকা দিতে হবে, আবার দুই ঘণ্টা রাখলেও ৫০ টাকা। এরপর আরও এক ঘণ্টা রাখলে পরবর্তী ঘণ্টার জন্য গুণতে হবে ৭৫ টাকা। অর্থাৎ তিন ঘণ্টায় দিতে হবে ১২৫ টাকা।
আর এই সময়ের অতিরিক্ত সময় যদি কেউ রাস্তায় গাড়ি পার্ক করে রাখে তাহলে তাকে প্রতি ঘণ্টায় গুণতে হবে ১০০ টাকা। এই পদ্ধতি চালু হলে রাস্তায় গাড়ি পার্কিং কমে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
অন-স্ট্রিট পাকিং ব্যবস্থা চালু করতে প্রয়োজনীয় কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে কাজ শুরু করেছে ডিএনসিসি। প্রথম পর্যায়ে রাজধানীর অভিজাত এলাকা খ্যাত গুলশান, বনানীতে চালু হবে এই পদ্ধতি। এই এলাকায় নির্দিষ্ট জায়গা করে দেবে ডিএনসিসি সেখানেই শুধু গাড়ি রাখা যাবে।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমাদের এই পদ্ধতি চালু করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রাস্তায় গাড়ি না রাখার জন্য উৎসাহিত করা। কেউ যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি রেখে দেয় তাহলে তাকে জরিমানা দিতে হবে।
তবে ডিএনসিসির এই চিন্তাভাবনাকে রাজধানীর ঢাকার জন্য আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সড়কে গাড়ি পার্কিংয়ের এই পদ্ধতিকে নিরুৎসাহিত না করে আরও উৎসাহিত করবে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যার ফলে যানজট কমার পরিবর্তে ওই এলাকায় যানজট আরও বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানারর্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মাহমুদ খান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, একটা আধুনিক ও উন্নত শহরে ২০-২৫ ভাগ রাস্তা থাকার কথা সেখানে আছে মাত্র ৭-৮ ভাগ। এমনিতেই রাস্তার অভাব। এরপর যদি অন-স্ট্রিট পার্কিং চালু করা হয়ে তাহলে যানজট আরও বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে অন-স্ট্রিট পার্কিং চালু করার কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া যে পরিমাণ পার্কিং চার্জের চিন্তা-ভাবনা করছে তাতে গাড়ি আরও বেশি বের হবে যানজট বাড়বে। এই চেষ্টা গাড়িকে নিরুসাহিত না গাড়িকে উৎসাহিত করবে। বরং আমাদের যে সকল পার্কিং আছে সেখানে আরও কয়েকগুণ চার্জ বাড়িয়ে দিতে হবে। যেন মানুষ ভয়ে প্রাইভেট কার নিয়ে বের না হয়। উন্নত দেশগুলোতে পার্কিং চার্জ অনেক বেশি সেভাবে পরিকল্পনা করতে হবে।